সাগর আহামেদ মিলন:
গাজীপুরে কাভার্ডভ্যান ভর্তি সুতা লুট করতে চালক মুন্নাফ সরকার (৫০)কে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. নাজমুল হোসেন (২২) রংপুর জেলার কোতোয়ালি থানার দেওয়ান টুলি এলাকার মো. মনোয়ার হোসেনের ছেলে , গকুল চন্দ্র সরকার ওরফে বকুল সরকার (৩০)গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ এলাকার মানিক চন্দ্র সরকারের ছেলে ।নিহত মুন্নাফ সরকারের স্ত্রী সাহেদা বেগম জানান,বুধবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ যাবেন বলে কাশিমপুর জিরানী বাসা থেকে বের হন। বর্তমানে তারা গাজীপুর কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা হলেও তাদের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা থানার হরিপুর গ্রামে।
শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হাসান জানান, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে সদর মেট্রো থানা পুলিশ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ন্যাশনাল পার্কের ৫ নম্বর গেট সংলগ্ন থেকে ,অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। নিহতের স্ত্রী সাহেদা বেগম খবর পেয়ে লাশটি তার স্বামী বলে শনাক্ত করেন কাভার্ড ভ্যান চালক মুন্নাফ সরকারকে।
এ ঘটনায় সাহেদা বেগম সদর মেট্রো থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশ জানতে পারে মুন্নাফ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা এলাকার নান্নু স্পিনিং মিল থেকে কাভার্ডভ্যান যোগে ১২২ বস্তা সুতা নিয়ে গাজীপুরের উদ্দেশে রওনা হন। পথে পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে আসামিরা ভোগড়া বাইপাস এলাকা থেকে কাভার্ডভ্যানে ওঠেন। এক পর্যায়ে চালক মুন্নাফকে কাভার্ডভ্যানের ভেতরেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা গেটে হত্যা করেন। পরে হত্যাকারীরা লাশটি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ৫ নম্বর গেট এলাকায় ফেলে রেখে সুতা ভর্তি কাভার্ডভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যান।
পরে পুলিশ আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার ধামরাই এলাকা থেকে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করেন। পরের দিন কাশিমপুর থানাধীন জিরানী এলাকা থেকে আসামি গকুল চন্দ্র সরকারকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় লুট করে নিয়ে যাওয়া কাভার্ডভ্যানের ১২২ বস্তা সুতা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, উদ্ধার হয়। আসামি গকুল চন্দ্র সরকারের দেওয়া তথ্য মোতাবেক রাতে হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি নাজমুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত নাজমুল হোসেন ও গকুল চন্দ্র সরকার ওরফে বকুল সরকার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আসামিদের গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়।