০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাভারে বিএনপি কর্মীর ওপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : ০১:১১:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১১ Time View

সাভারে বিএনপি কর্মীর ওপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ

সাভার প্রতিনিধি:-ঢাকার সাভারে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের কর্মী দাবি করা মো. রনি (২৬) নামে এক যুবকের ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে।

হামলার দায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মীর ওপর চাপিয়েছেন ভুক্তভোগী।এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

ঘটনাটি ঘটে গত ৯ ডিসেম্বর বিকেল আনুমানিক ৪টা ৫০ মিনিটে হেমায়েতপুরের ওয়াছিল উদ্দিন সড়কে আল আকসা জামে মসজিদের সামনে। অভিযোগে বলা হয়,পূর্বহাটি এলাকা থেকে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফেরার পথে রনির সামনে মোট ১০–১২ জন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পথরোধ করে।

রনির দাবি,হামলাকারীদের মধ্যে হেমায়েতপুর এলাকার মো. মনির হোসেন (৩২), মো. আকবর (৩৫) ও মো. নাসির (৩৩) ছিলেন।তিনি জানান, মনির একটি প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।পরে পেরেকযুক্ত কাঠের খিল দিয়ে তার পেটে আঘাত করা হয়।আকবর ধারালো চাকু দিয়ে তার ডান হাত ও কবজির নিচে আঘাত করেন।নাসিরসহ অন্যান্যরা লাঠি ও লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে মারধর করে।

স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিতে দিতে ঘটনাস্থল ছেড়ে যায় বলে দাবি রনির। হামলার পর স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। পরে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করে সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে দ্বিধা এই হামলার পর স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে।এলাকাবাসীর অভিযোগ—অভিযুক্ত মনির অতীতে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।তাকে বিভিন্ন সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে দেখা গেছে বলে দাবি তাদের।এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই নেতাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো একটি ছবিও ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে জানান কয়েকজন বাসিন্দা।

তবে সম্প্রতি মনির নিজেকে ভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয়ে উপস্থাপন করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।স্থানীয়দের প্রশ্ন—যিনি অতীতে আওয়ামী লীগ–ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন,তিনি এখন কীভাবে জামায়াতপন্থী পরিচয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন? এ বিষয়গুলো নিয়ে এলাকাজুড়ে বিভ্রান্তি ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

হেমায়েতপুর তেঁতুলঝোড়ায় সম্প্রতি অনলাইন ও কিছু মিডিয়ায় মোশারফ হোসেন মুসা ও তার ভাই শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ প্রচারিত হয়েছে।তবে স্থানীয় সূত্র ও নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী,তারা কোনো অপরাধে জড়িত নন। এলাকাবাসী জানিয়েছেন,এই অভিযোগগুলো প্রমাণহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করা এই নেতারা ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছেন।তারা আশা করছেন, সকলের কাছে সত্য উদঘাটন হবে এবং গুজবের মাধ্যমে তাদের নাম অবাঞ্ছিতভাবে tarnished হবে না।

এ অভিযোগগুলোর কোনো তথ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।রাজনৈতিক শত্রুতা,নাকি ব্যক্তিগত বিরোধ?রনি হামলাকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করলেও এলাকাবাসীর একাংশ মনে করেন—এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য,দলীয় বিভাজন এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল।ফলে এই হামলা ব্যক্তিগত বিরোধও রাজনৈতিক রং পেতে পারে।রাজনীতি,ব্যক্তিগত শত্রুতা,প্রভাব–প্রতিপত্তি ও পরিচয় বদলের সংস্কৃতি—সবকিছু মিলিয়ে ঘটনার নেপথ্যে জটিলতা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

এই বিষয়ে হেমায়েতপুর ট্যানারি ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আব্বাস বলেন,অভিযোগটি এখনও হাতে পৌঁছায়নি।অভিযোগ পেলে তদন্তের পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

সাভারে বিএনপি কর্মীর ওপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ

Update Time : ০১:১১:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

সাভারে বিএনপি কর্মীর ওপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ

সাভার প্রতিনিধি:-ঢাকার সাভারে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের কর্মী দাবি করা মো. রনি (২৬) নামে এক যুবকের ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে।

হামলার দায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মীর ওপর চাপিয়েছেন ভুক্তভোগী।এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

ঘটনাটি ঘটে গত ৯ ডিসেম্বর বিকেল আনুমানিক ৪টা ৫০ মিনিটে হেমায়েতপুরের ওয়াছিল উদ্দিন সড়কে আল আকসা জামে মসজিদের সামনে। অভিযোগে বলা হয়,পূর্বহাটি এলাকা থেকে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফেরার পথে রনির সামনে মোট ১০–১২ জন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পথরোধ করে।

রনির দাবি,হামলাকারীদের মধ্যে হেমায়েতপুর এলাকার মো. মনির হোসেন (৩২), মো. আকবর (৩৫) ও মো. নাসির (৩৩) ছিলেন।তিনি জানান, মনির একটি প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।পরে পেরেকযুক্ত কাঠের খিল দিয়ে তার পেটে আঘাত করা হয়।আকবর ধারালো চাকু দিয়ে তার ডান হাত ও কবজির নিচে আঘাত করেন।নাসিরসহ অন্যান্যরা লাঠি ও লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে মারধর করে।

স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিতে দিতে ঘটনাস্থল ছেড়ে যায় বলে দাবি রনির। হামলার পর স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। পরে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করে সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে দ্বিধা এই হামলার পর স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে।এলাকাবাসীর অভিযোগ—অভিযুক্ত মনির অতীতে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।তাকে বিভিন্ন সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে দেখা গেছে বলে দাবি তাদের।এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই নেতাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো একটি ছবিও ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে জানান কয়েকজন বাসিন্দা।

তবে সম্প্রতি মনির নিজেকে ভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয়ে উপস্থাপন করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।স্থানীয়দের প্রশ্ন—যিনি অতীতে আওয়ামী লীগ–ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন,তিনি এখন কীভাবে জামায়াতপন্থী পরিচয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন? এ বিষয়গুলো নিয়ে এলাকাজুড়ে বিভ্রান্তি ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

হেমায়েতপুর তেঁতুলঝোড়ায় সম্প্রতি অনলাইন ও কিছু মিডিয়ায় মোশারফ হোসেন মুসা ও তার ভাই শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ প্রচারিত হয়েছে।তবে স্থানীয় সূত্র ও নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী,তারা কোনো অপরাধে জড়িত নন। এলাকাবাসী জানিয়েছেন,এই অভিযোগগুলো প্রমাণহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করা এই নেতারা ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছেন।তারা আশা করছেন, সকলের কাছে সত্য উদঘাটন হবে এবং গুজবের মাধ্যমে তাদের নাম অবাঞ্ছিতভাবে tarnished হবে না।

এ অভিযোগগুলোর কোনো তথ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।রাজনৈতিক শত্রুতা,নাকি ব্যক্তিগত বিরোধ?রনি হামলাকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করলেও এলাকাবাসীর একাংশ মনে করেন—এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য,দলীয় বিভাজন এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল।ফলে এই হামলা ব্যক্তিগত বিরোধও রাজনৈতিক রং পেতে পারে।রাজনীতি,ব্যক্তিগত শত্রুতা,প্রভাব–প্রতিপত্তি ও পরিচয় বদলের সংস্কৃতি—সবকিছু মিলিয়ে ঘটনার নেপথ্যে জটিলতা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

এই বিষয়ে হেমায়েতপুর ট্যানারি ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আব্বাস বলেন,অভিযোগটি এখনও হাতে পৌঁছায়নি।অভিযোগ পেলে তদন্তের পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।